Refraction of Light (Second Part): আলোর প্রতিসরণের দ্বিতীয় অংশ: আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাব এবং প্রিজমে আলোকের প্রতিসরণ: আয়তাকার কাঁচের স্...
আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাবের গঠন:
![]() |
Glass Slab |
আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাবে প্রতিসরণের বৈশিষ্ট্য:
- আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাবের মধ্য দিয়ে আলোকরশ্মি প্রতিসরণের পর আপতিত রশ্মি ও নির্গত রশ্মি পরষ্পর সমান্তরাল হয়। অর্থাৎ আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাবে আলোর প্রতিসরণে চ্যুতিকোণের মান শূন্য হয়
- এক্ষেত্রে আপতিত আলোক রশ্মি স্ল্যাবের উপর তির্যকভাবে পড়লে আপতিত রশ্মি ও নির্গত রশ্মির মধ্যে একটি পার্শ্বসরণ ঘটে থাকে।
সমান্তরাল কাচফলকের মধ্য দিয়ে আলোকের প্রতিসরণ (Refraction of Light Through a Parallel Slab):
![]() |
Refraction of Light Through Glass Slab |
এখন A বিন্দুতে আপতন কোণ i1, প্রতিরণ কোণ r1 এবং বায়ু সাপেক্ষে কাচের পরম প্রতিসরাঙ্ক μ হলে স্নেলের সূত্রানুযায়ী লেখা যায়,
μ1×sini1=μ2×sini2
এখানে, 1×sini1=μ×sinr1
বা, μ=sini1sinr1 ... ... ... (i)
আবার B বিন্দুতে আপতন কোণ এখানে r2 এবং প্রতিসরণ কোণ i2 হলে স্নেলের সূত্র থেকে লেখা যায় যে,
μ1×sini1=μ2×sini2
এখানে, μ×sinr2=1×sini2
বা, μ=sini2sinr2 ... ... ... (ii)
এখন (i) নং ও (ii) নং সমীকরণ থেকে পাই,
sini1sinr1=sini2sinr2
এখানে, r1=r2, কারণ এরা পরষ্পর একান্তর কোণ।
তাই, sini1=sini2
বা, i1=i2
সুতরাং কোনও আলোকরশ্মি সমান্তরাল কাচফলকের মধ্য দিয়ে প্রতিসৃত হলে আপতিত রশ্মি ও নির্গত রশ্মি পরষ্পর সমান্তরাল হয়। অর্থাৎ আলোকরশ্মির কোনও চ্যুতি ঘটে না। কিন্তু আলোকরশ্মির একটি আলোকরশ্মির একটি পার্শ্বসরণ ঘটে।
এখন লম্ব আপতনের ক্ষেত্রে i1=0∘ এবং সেক্ষেত্রে পার্শ্বসরণের মান হবে শূন্য (0)
এবং আপতন কোণ i1=90∘ হলে পার্শ্বসরণের পরিমান হবে ফলকের বেধের (t) সমান।
![]() |
প্রিজম |
![]() |
প্রিজম |
![]() |
প্রিজমের তলগুলির বর্ণনা |
আলোকবিজ্ঞানে প্রিজম বলতে কাঁচের একটি ত্রিভূজাকৃতি ফলককে বোঝায়। এই ত্রিভূজাকৃতি প্রিজমের মোট পাঁচটি তল থাকে। তিনটি আয়তাকার তল এবং দুটি ত্রিভূজাকৃতি তল। এর মধ্যে দুটি আয়তাকার তল মসৃণ হয়, এদের প্রতিসারক তল (Refracting Surface) বলে। এই তলদুটির অন্তর্গত কোণকে প্রিজমের প্রতিসারক কোণ (Angle of Prism) বা সংক্ষেপে প্রিজমের কোণ বলে। উপরের চিত্রে EHJG এবং EHIF হল দুটি প্রতিসারক তল। এদের ছেদরেখা EH কে প্রিজমের ধার (Edge) বলা হয়। প্রিজমের ধারের সাথে লম্বভাবে অবস্থিত যেকোনও সমতল ছেদকে প্রিজমের মুখ্যছেদ (Principle Section) বলা হয়। চিত্রে ABC হল একটি মুখ্যছেদ। প্রিজমের তৃতীয় আয়তাকার তল FIJH সাধারণত প্রতিসারক তলদুটির সাথে সমান কোণ করে থাকে। এই তলটিকে প্রিজমের ভূমি (Base of The Prism) বলা হয়। প্রিজমের ত্রিভূজাকৃতি তলদুটি EFG এবং HIJ সাধারণত EH রেখার অভিলম্ব তল হয়। প্রতিসারক তল দুটি ছাড়া বাকী তলগুলির মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিসরণ হয় না, তাই এই বাকী তলগুলি খুব মসৃণ করার প্রয়োজন পড়ে না।
প্রিজম (Prism):
পরষ্পরের সঙ্গে আনত দুটি সমতল দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনও স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমের অংশবিশেষকে প্রিজম বলে। এখানে উপরের চিত্রে, EFGJIH হল একটি প্রিজম যা EFIH এবং EGJH দুটি সমতল দ্বারা সীমাবদ্ধ।
প্রতিসারক তল (Refracting Surface):
পরষ্পরের সঙ্গে আনত যে দুটি সমতল দ্বারা প্রিজমটি গঠিত হয়, তাদের প্রতিসারক তল বলে। উপরের চিত্রে, EHJG এবং EHIF হল দুটি প্রতিসারক তল।
প্রান্তরেখা (Edge of a Prism):
প্রিজমের প্রতিসারক তলদুটি যে সরলরেখায় মিলিত হয়, তাকে প্রিজমের প্রান্তরেখা বলা হয়। এখানে উপরের চিত্রে, EH হল প্রান্তরেখা।
প্রতিসারক কোণ (Refracting Angle or Angle of Prism):
প্রিজমের প্রতিসারক তলদুটি যে কোণে আনত থাকে সেই কোণকে প্রিজমের প্রতিসারক কোণ বা সংক্ষেপে প্রিজম কোণ বলা হয়।
পার্শ্বতল এবং ভূমি (Side Surface & Base of The Prism):
কোনও প্রিজম সাধারণত তার প্রতিসারক তলদুটি ছাড়া আরও তিনটি তল দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। এই তলগুলির মধ্যে দুটি তল ত্রিভূজাকৃতি এবং তা প্রান্তরেখার সাথে লম্বভাবে থাকে।
এখানে উপরের চিত্রে EFG এবং HIJ তলদুটি হল প্রিজমটির ত্রিভূজাকৃতি পার্শ্বতল।
অপর তলটি প্রতিসারক তলদুটির সাথে সরলরেখায় মিলিত হয়। ওই সরলরেখা দুটি প্রান্তরেখার সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে থাকে। এই তলটি আয়তাকার হয়। এখানে এই আয়তাকার তলটি হল FGJI। একে প্রিজমের ভূমি বলা হয়।
প্রিজমের মধ্য দিয়ে আলোকের প্রতিসরণ (Refraction of Light Through Prism):
![]() |
প্রিজমের মধ্য দিয়ে আলোকের প্রতিসরণ |
ধরাযাক, ABC হল কোনও প্রিজমের মুখ্যছেদ, ∠A হল প্রিজমের কোণ, BC হল প্রিজমের ভূমি এবং AB ও AC প্রিজমের দুটি প্রতিসারক তলকে বোঝায়। একটি আলোকরশ্মি PQ প্রিজমের AB প্রতিসারক তলের Q বিন্দুতে আপতিত হয়ে QR পথে যায় এবং প্রিজমের অভ্যন্তরে দ্বিতীয় প্রতিসারক তল AC এর R বিন্দুতে আপতিত হয়ে RS পথে প্রিজম থেকে বায়ুতে নির্গত হয়।
এই PQ এবং SR কে বর্ধিত করলে তারা O বিন্দুতে পরষ্পরকে ছেদ করে। এখন প্রিজমটি না থাকলে রশ্মিটি PQOT পথে যেত, কিন্তু প্রিজম থাকার ফলে আলোক রশ্মিটি ORS অভিমুখে নির্গত হয়। সুতরাং প্রিজমে প্রতিসরণের ফলে আলোকরশ্মির চ্যুতিকোণ হয়,
δ=∠TOS=∠OQR+∠ORQ
এখন Q বিন্দুতে AB প্রতিসারক তলের উপর N1QO1 এবং R বিন্দুতে AC তলের উপর N2RO1 দুটি অভিলম্ব টানা হল। এই অভিলম্ব দুটি পরষ্পরকে O1 বিন্দুতে ছেদ করে।
সুতরাং Q বিন্দুতে আপতন কোণ i1=∠N1QP এবং প্রতিসরণ কোণ =r1=∠RQO1 এবং R বিন্দুতে আপতন কোণ =r2=∠QRO1 এবং প্রতিসরণ কোণ =i2=∠N2RS
এখানে, ΔOQR এর ক্ষেত্রে লেখা যায়,
∠TOS=∠OQR+∠ORQ [বহিঃস্থ কোণ, বিপরীত অন্তস্থ কোনদুটির সমষ্টির সমান]
সুতরাং চ্যুতিকোণ, δ=∠TOS=∠OQR+∠ORQ
=(∠OQO1−∠RQO1)+(∠ORO1−∠QRO1)
=(∠N1QP−∠RQO1)+(∠N2RS−∠QRO1)
=(i1−r1)+(i2−r2)
=i1+i2−(r1+r2)
এখন, ΔQRO1 ত্রিভূজের r1+r2+∠O1=2 হল 2 সমকোণের সমান।
এবং AQO1R চতুর্ভূজে ∠AQO1=1 সমকোণ এবং ∠A+∠O1=2 সমকোণ।
সুতরাং বলা যায়, ∠A=r1+r2
সুতরাং এখানে আলোকরশ্মিটির চ্যুতিকোণ δ=i1+i2−A
ন্যুনতম চ্যুতির ধারণা (Idea of Minimum Deviation):
∠A প্রতিসারক কোণ বিশিষ্ট কোনও প্রিজমের উপর কোনও আলোকরশ্মি i1 কোণে আপতিত হলে এবং i2 কোণে প্রিজম থেকে নির্গত হলে আলোকরশ্মির চ্যুতিকোণ হয়,
δ=i1+i2−∠A
সুতরাং একটি নির্দিষ্ট প্রিজমের ক্ষেত্রে চ্যুতিকোণের মান আপতন কোণের উপর নির্ভর করে। একটি নির্দিষ্ট আলোকরশ্মিকে কোনও প্রিজমের উপর বিভিন্ন কোণে আপতিত করে রশ্মির চ্যুতিকোণ কত হয় তা বর্ণালীবীক্ষণ বা স্পেকট্রোমিটার যন্ত্র দিয়ে খুব সহজে মাপা যায়।
এখানে আপতন কোণ (i) বনাম চ্যুতিকোণ (δ) এর লেখচিত্র আঁকলে উপরের চিত্রের ন্যায় দেখতে হয়। এখানে আপতন কোণের একটি নির্দিষ্ট মানে (i0) চ্যুতিকোণের (δm) মান সর্বনিম্ন হয়। এই আপতন কোণের মান i0 থেকে বাড়লে বা কমলে উভয়ক্ষেত্রেই চ্যুতিকোণের মান বাড়তে থাকে। চ্যুতির এই সর্বনিম্ন মানকে প্রিজমটির সর্বনিম্ন চ্যুতিকোণ (δm) বলে।
![]() |
প্রিজমে ন্যুনতম চ্যুতির অবস্থানে আপতন কোণ ও চ্যুতিকোণের লেখচিত্র |
এই সর্বনিম্ন চ্যুতিকোণের মান (δm) পারিপার্শ্বিক মাধ্যম সাপেক্ষে প্রিজমের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক এবং প্রিজমের প্রতিসারক কোণের উপর নির্ভর করে। আপতিত রশ্মির সাপেক্ষে প্রিজমটিকে যে অবস্থানে রাখলে চ্যুতির মান সর্বনিম্ন হয়, তাকে প্রিজমটির ন্যুনতম চ্যুতির অবস্থান (Position of Minimum Deviation) বলে।
চিত্রে দেখা যায় যে, দুটি আপতন কোণ i1 এবং i2 এর জন্য δ এর মান একই থাকে। কারণ δ=i1+i2−A এই সমীকরণে i1 কে i2 এবং i2 কে i1 লিখলে δ এর কোনও পরিবর্তন হয় না। বাস্তবিক পক্ষে আলোর প্রত্যাগমনের নীতির জন্যই এইরকম হয়। অর্থাৎ আপতন কোণের দুটি মানের জন্য প্রিজম দ্বারা একটি রশ্মির চ্যুতির মান সমান হয়। এই ন্যুনতম চ্যুতির ক্ষেত্রে i1=i2=i0
তাই বলা যায়, যখন আপতন কোণ i1 এবং নির্গম কোণ i2 পরষ্পর সমান হয়, তখন চ্যুতিকোণের মান সর্বনিম্ন হয়।
ন্যুনতম চ্যুতির অবস্থানে প্রিজমের উপাদানের প্রতিসরাঙ্কের মান নির্ণয়:
চ্যুতিকোণ ন্যুনতম হবে যদি i1=i2 এবং r1=r2 হয়। সুতরাং ন্যুনতম চ্যুতি
δm=i1+i2−A=2i1−A
বা, 2i1=A+δm
বা, i1=A+δm2
এবং A=r1+r2=2r1
বা, r1=A2
সুতরাং প্রিজমের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক μ=sini1sinr1=sin(A+δm2)sin(A2)
COMMENTS